আব্দুল হামিদ শেখ নড়াইল:
তথ্য প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ ও খেলাধুলা। বিলুপ্তপ্রায় খেলাধুলার সাথে পারিচয় করিয়ে দিতে নড়াইলে ৩ জানুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫ দিন ব্যাপী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন মেলা ও খেলাধুলা।
গত বছরের ন্যায় এবারও ২০২৫ সালের শুরুতে ৩ জানুয়ারি থেকে জমকালো আয়োজনে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ৫নং লক্ষীপাশা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী উলা গ্রামের উলা চৌধুরী মাঠে ৫ দিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
দেশের সুপরিচিত পোশাক ব্রান্ড ব্লু ড্রীমের সহযোগিতায় এবং উলা ও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর মানুষদের আয়োজনে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের মেলায় নড়াইল জেলার প্রতিটা এলাকার মানুষের উপস্থিত থাকবে বলে জানান নড়াইলের কৃতি সন্তান বিশিষ্ট শিল্পপতি বাংলাদেশের সুপরিচিত পোশাক ব্রান্ড ব্লু ড্রীমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম স্বপ্নল চৌধুরী সোহাগ।
তিনি বলেন এবছরের গ্রামীণ মেলাতে
প্রথম দিন ৩ জানুয়ারি শীতবস্ত্র বিতরণ ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৩ হাজার কম্বল ও ১ হাজার লুঙ্গি বিতরণ করা হবে। দ্বিতীয় দিন ৪ জানুয়ারি চাকরি ও উদ্যোক্তা ট্রেনিং এবং রাতে পিঠা উৎসব যে পিঠা উৎসবে পরিচিত অপরিচিত অনেক ধরনের পিঠার সমরাহ থাকবে। তৃতীয় দিন ৫ জানুয়ারি দুপুর ২ টা থেকে ছোটদের বিভিন্ন প্রকার খেলাধুলা ও রাতে পুরাতন জিনিসের প্রদর্শনী নিয়ে মেলা হবে যে মেলার মাধ্যমে বর্তমান জেনারেশন আগেকার দিনে ব্যবহারিত মালামাল দেখতে পারবে। চতুর্থ দিন ৬ জানুয়ারি দুপুর থেকে বড়দের বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও রাতে জারি গান ও কৌতুক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। পঞ্চম দিন অর্থাৎ গ্রামীন মেলার শেষ দিন ৭ জানুয়ারি লটারি ও সকল খেলাধুলার পুরস্কার বিতরণ সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের সুপরিচিত পোশাক ব্রান্ড ব্লু ড্রীমের স্পন্সরে অনুষ্ঠানে বাইক ফ্রিজ সহ ৫ শতাধিকের বেশি উপহার থাকবে বলেও জানান কেএসএম স্বপ্নীল চৌধুরী সোহাগ। তাই এবারের মেলা গত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক হবে বলে মনে করছেন তিনি ও এলাকাবাসী।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি, নড়াইল জেলার এসপি, ডিসি, ওসি, সহ বিভিন্ন গ্রামের শ্রদ্ধেয় মুরব্বি সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে বলেও জানান।
অনুষ্ঠানে জুয়া ও কোনো ধরনের অসামাজিক কাজ হবে না অনুষ্ঠান ঘিরে সর্বোচ্চ সিসি ক্যামেরা ও প্রশাসনিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
আপনি কোনদিন জনপ্রতিনিধি হবেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি প্রায় দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি সময় ধরে আমার জেলা নড়াইল ও নড়াইলের বাইরে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকেছি, আমি এই কম সময়ে আমার সর্বোচ্চ টা দিয়ে সমাজের জন্য সাধ্যমত উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সমাজের মানুষই ভালো জানে, আমি কি করেছি বা ভবিষ্যতে কি করব।
তবে হ্যাঁ অনেকে মনে করেন আমার এই সামাজিক কর্মকান্ড গুলো আমি ভবিষ্যতে স্বার্থ হাসিলের জন্য করছি, জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য করছি, তবে বিগত সরকারের আমলেও আমি অনেকবার বলেছি এখনও বলছি আমি মানুষ ও সমাজের জন্য যাই করি নিঃস্বার্থভাবে করি, নিজের দায়বদ্ধতা থেকে করি, কোনদিন রাজনীতি করার বা জনপ্রতিনিধি হওয়ার বিন্দুমাত্র আমার ইচ্ছা নেই। জনপ্রতিনিধি না হয়েও সমাজের জন্য দায়বদ্ধতা থেকে অনেক কিছু করা যায় সেটাই বাস্তবে আমি প্রমাণ করার জন্যই বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে যুক্ত থাকি ও উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নেয়, তবে কিছু কুচক্রী মহল আমাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা চাচ্ছে আমি সমাজের প্রতি সমাজের মানুষের প্রতি বিরক্ত হয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে যাই। তবে তারা ভুল ভাবছে আমি আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোনো প্রকার স্বার্থ ছাড়াই মানুষকে আনন্দ দিতে সমাজকে বদলে দিতে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে যুক্ত থাকবো।
অন্যদিকে গ্রামীণ মেলার আয়োজকরা জানান গ্রামীণ মেলার এ আয়োজন আমরা গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখার লক্ষ্যে করে থাকি, এবারও তার ব্যতিক্রম নয়, এ গ্রামীন মেলার মাধ্যমে অতীতে হারিয়ে যাওয়া অনেক অপরিচিত জিনিসের সঙ্গে আমাদের এই জেনারেশনের ছেলে মেয়ে পরিচিত হবে।