
আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা :
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল (বিএনপি) এর সভাপতি মোঃ শাহাজান আলী কর্তৃক ইউনিয়ন ব্যাপী চলছে অনিয়মের ঝড়। তারই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞ আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে উপজেলা প্রশাসনকে জড়িয়ে নাটকীয় সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি শিমুলিয়া ইউনিয়নের মাটিকুমড়া গ্রামের মৃত শাহাদৎ বিশ্বাসের ছেলে।
ঘটনার বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের ১৭নং উত্তর রাজাপুর গ্রামের একটি জমিতে বিজ্ঞ আদালত থেকে সোহরাব হোসেন গং এর পক্ষে রায়, ডিক্রী ও মামলার বিবাদীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় ৩য় পক্ষ হয়ে ৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ শাহাজান আলী তার নিজের স্বার্থ হাসিল করতে তিনি সহ তার অনুসারীদের সংযুক্ত করে সোহরাব হোসেন গং ও উপজেলা প্রশাসনকে হয়রানী করতে নাটকীয় সংবাদ সম্মেলন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে তিনি স্বীকার করেন সোহারব হোসেনের পক্ষে বিজ্ঞ আদালত থেকে সোহরাব হোসেন গং এর পক্ষে রায় ও ডিক্রী দিয়েছেন। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “অতঃপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উল্লেখিত সম্পত্তির সরকারি স্বার্থ রক্ষা ও উদ্ধারে বিজ্ঞ আদালতে আপিল মামলা দায়ের করা হয়েছে যা বিচারাধীন।” ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে সোহারব হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম পল্লব বিগত ০৪জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ২৬ মে সংবাদ সম্মেলনের তথ্য চেয়ে একটি আবেদনপত্র দাখিল করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ শাহাজান আলীর নিকট থেকে সংবাদ সম্মেলনের কপি সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৩০জুন তথ্য সরবরাহ করেন। কিন্তু উক্ত তথ্যে দেখা যায় শাহাজান আলী প্রেসক্লাবে সংবাদকর্মীদের নিকট দেওয়া তথ্য পরিবর্তন করে লিখেছেন “তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর মাধ্যমে জানতে পারি সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি সরকারি স্বার্থ রক্ষা ও উদ্ধারে বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান।” তাহলে পূর্বের সংবাদ সম্মেলনটা মিথ্যা ও বানোয়াট ছিলো কি না যাহার কারণে সভাপতি মহাদয় নিজেই গোপনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনকে নিজেই প্রশ্নবিদ্ধ করে সংশোধন করার তিনি স্থানীয় উপজেলা-ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ও সংবাদকর্মীদের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেখা যাচ্ছে। এখানে ঘটনার বিষয়ে সোহরাব হোসেন গং এর সাথে সরকার পক্ষের উক্ত জমির সাথে সম্পৃক্ততা থাকতে পারে কিন্তু শাহাজান আলীর সাথে উক্ত জমির সাথে কোন রূপ সম্পর্ক নাই, তার বাড়ি থেকে উক্ত জমি প্রায় ২/৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ঘটনার বিষয়ে সংবাদকর্মীরা তার নিকট থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ করলে তিনি তার বাহিনীর সদস্য সাবেক ছাত্রদলের সেক্রেটারী পরিচয়ধারী, মোকামতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আনিসুর রহমান মিলন কর্তৃক সংবাদকর্মীদের হুমকি-ধামকি দেওয়ান। এছাড়াও তিনি সংবাদকর্মীকে সত্য প্রকাশে বাঁধা দেওয়ার জন্য ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবের শরণাপন্ন হয়ে সংবদকর্মীর নামে অপপ্রচার করে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েও খ্যান্ত হননি কারণ দর্শানোর নোটিশটি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা তার নিজ নামীয় ফেসবুকে আপলোড দিয়ে সংবাদকর্মীর মানহানীকর কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার এই সব কর্মকান্ড নিয়ে জনমতে প্রশ্ন বিদ্ধমান হতে দেখা গেছে।
৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ শাহাজান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন বিএনপি ও থানা বিএনপির নেতৃবৃন্দ পাশে ছিলো। আমি শুধু পাঠক। আমি শুধু পড়ে শুনাইছি। ওখানে উপস্থিত জনগন সই করেছেন। ইউএনও স্যারের কাছে সংবাদ সম্মেলনের কপি ঘুরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ও তোমার শুনতে হবে না। উক্ত ঘটনার বিষয়ে পল্লবদের বিজ্ঞ আদালতের রায় ডিক্রী আছে কি না এটার বিষয়ে তিনি বলেন, ১৪৪ধারা বহাল আছে। তারা এক তরফা রায় করে নিয়ে এসেছে। এবার দোতরফা রায়ের শুনানী পর খারিজ হবে।
সোহারব হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম পল্লব বলেন, তিনি আমাদের একজন শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি। দলীয় পদের মাথা হয়ে আমার পিতা ও বিজ্ঞ আদালতের বিপক্ষে কথা বলা ও মানহানি করার অধিকার তিনি কোথায় পেয়েছেন ? এটা আমার জানা নেই। এছাড়াও তিনি নিজের স্বার্থে দলীয় পদের বলে এলাকার নিরিহ নেতাকর্মীদের দিয়ে নানা বিদ অপকর্ম করছেন। তিনি তো বিচারক নন। তিনি দলীয় পদ ব্যবহার করে বিজ্ঞ আদালতের বিচারিক কার্যক্রমকে প্রভাবিত করা লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। তাহার এমন কর্মকান্ডের বিষয়ে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।